সে

ভালোবাসা / ফাল্গুন (ফেব্রুয়ারী ২০১৫)

জি সি ভট্টাচার্য
যে সময়ের কথা বলছি তখন আমি পড়তুম ক্লাশ এইটে। আর বয়স ও তাই ছিল কম।

তবে আমাদের যৌথ পরিবার ছিল এক্কেবারে গোঁড়া হিন্দু। একে হিন্দু তায় আবার ব্রাহ্মণ, যেন সোনায় সোহাগা । তবে আমার মাথায় তখন ও কিছুতেই ঢুকতো না যে জাত ধর্ম এইসব যখন ভগবান বা আল্লাহ পাক তৈরী করেননি তখন সেসব নিয়ে লড়াই কিসের আর ছোট বড়ই বা কিসের? সে অবশ্য আজ ও ঢোকে না।

আমার মনে হতো একটা সোজা কথা যে হিন্দুর ঘরে জন্মেছে সে হিন্দু হবে আর যে মুসলমানের ঘরে জন্মেছে সে না হয় মুসলমান হবে। আর যে ব্রাহ্মণ হবে সে ও বংশের ধারায় আর যে চামার মানে শূদ্র সে ও তো তাই। জন্মনাঃ জাতি…..তা এসব মানে জন্ম তো আর কারো নিজের হাতে নয়। ছোট বড় বা উঁচু নীচুর ভেদটা আসে কি করে?

এখন ক্লাশে যে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো, বেস্ট বয় ও তার নাম ইকবাল। খুব সুন্দর আর মিষ্টি ছেলে। সব্বাই তাকে ভালোবাসতো। কখন ও সে ক্লাশে ফার্ষ্ট হ’তো কখনো আমি। তখন ইকবাল শুধু হাসতো আর বলতো –‘যাঃ…এবার আমার প্রাইজটা মাঠে মারা গেলো….তোকেই দিতে হবে ক্ষতিপূরণ’। আমি মুখ নীচু করে বলতুম….’তাই দেবো। অন্যায় করে ফেলেছি একটা যখন….’

এখন এমন মুশ্কিল যে তার নামটি ও বাড়িতে করবার যো ছিলো না আমার। বাড়িতে ডাকা তো রইলো গাছের মাথায়….অভিভাবকেরা তাকে বাড়ির চৌকাঠ পার হতে দিলে তো। উল্টে তার সঙ্গে খেলি শুনলেই আমাকে চান করিয়ে তবে ঘরে ঢুকতে দিতো। কি জ্বালাতন বলো তো। আর তার টিফিনের থেকে ভাগ নিয়ে খেয়েছি সেটি জানলে তখন? নির্ঘাৎ ত্যাজ্যপুত্র ……হিঃ…হিঃ….হিঃ….তবে একটাই তো ছেলে আমি বংশের….তাই….

সে কথা যাক। তার কথা আরেক দিন বলবো।

আজ বলি নিয়তির কথা। সে ও বেশ সুন্দর মেয়ে ছিল। প্রায় আমারই বয়সী বা বছর খানেকের ছোটই ছিল। তবে সে হিন্দু হ’লে কি হয় ব্রাহ্মণ নয় বলে তার দৌড় ছিল আমাদের বৈঠকখানা অবধি। ছোট জাতের মেয়ে কি অন্দরে যেতে পায় নাকি? তবে প্রতি বছর বিজয়া আর দোলের দিন ঠিক প্রণাম টণাম করতে আসতো। অন্য দিন ও। তবে সে যে আমার জন্য তা আমি জানতুমই না।

একদিন আমি বিকেলে ফিরছি স্কুল থেকে, পথে নিয়তির সাথে দেখা।

‘কি রে রাজকুমার, আজ যে বড় সকাল সকাল ফিরছিস?’

‘অ্যাই মেয়ে, তুই আমাকে রাজকুমার বলবি না বলছি। আমি কি রাজার ছেলে নাকি?

’হিঃ….হিঃ…..হিঃ………তুই একটা বুদ্ধু। বেশী সুন্দর ছেলেদের রাজপুত্তুর বলে তা ও জানিস না?’

‘কোন ছাই সুন্দর আমি? ইকবালকে যদি তুই একবার দেখতিস, আর ওই বাজে কথা বলতিস না…..’

‘এমা, ইকবাল…..? সে তো মুসলমানের ছেলে হবে। তাকে আবার কেউ সুন্দর বলে নাকি?’

‘তা বলবে কেন? সে কি আর মানুষ? তুই এখন যা তো….আমাকে রাগাবি না বলছি…’

‘যেতে আমার বড় বয়েই গেছে। তুই চল আজ আমাদের বাড়ী। মা ডেকেছে তোকে?’

‘তা মাসিমা ডাকলেন কেন হঠাৎ আমাকে?’

‘আমার সঙ্গে তোর বিয়ে দেবে বলে….’

‘মারবো এক থাপ্পড় বেশী ফাজলামো করলে…..হ্যাঁ না তো…’

‘তা মারবি তো মার। তবে বাড়ী চল। বাবা জয়নগরের মোয়া নিয়ে এসেছে, তাই…..’

তা গেলুম। নিয়তি তো কারো বাধ্য নয়….নিয়তি কেন বাধ্যতে? তবে আমি যে মোয়া আর নলেন গুড়ের সন্দেশ সেঁটেছি সে’খানে বসে, সেটি নিয়তিকে কখনো বলতে না করে দিলুম বইকি। নইলে আর রক্ষা আছে? .

কোনমতে এইভাবেই চলছিল। তা ভাগ্য বলে একটা কথা আছে না। নিয়তির বাবা হঠাৎ করে পথে গাড়ির ধাক্কায় মারা যেতেই সংসারটা ভেসে যাবার অবস্থা হ’লো। আমি তখন সবে স্কুল ফাইন্যাল পাশ করেছি। স্কুলে আমি তিন নম্বর বেশী পেয়ে ফার্ষ্ট ইকবাল সেকেন্ড হয়েছিল, প্রথম শ্রেণিতে। আমার জমানো টিফিনের পয়সা থেকে আবার একটা প্রাইজ গচ্ছা গেলো আর কি? তা দুষ্টু ছেলেটা তখন নিতেই চায় না মোটে। একটু বড় হয়েছে বলে লজ্জা পায় আর কি? তা না নিলে আমি ঘা কতক দিয়ে দেবো না। করে কি?

আমি তখন খেলার সময়ে লুকিয়ে লুকিয়ে ছোট বাচ্ছাদের টিউশানী ধরলুম কয়েকটা। না আমাদের বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভালোই ছিল….সে জন্য নয়। দু’টো ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে নিয়তির মা যে কি করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না দেখে….সামান্য কি সেলাই টেলাইয়ের কাজ করতেন কিন্তু সেই সামান্য আয়ে চলে না। আমি টাকাটা নিয়তিকে জোর করে গছাতাম শুধু মাসিমাকে ছাড়া আর কাউকে না বলবার শর্ত দিয়ে। তবে প্রথম প্রথম গোটা কয়েক টিউশানিতে কতই বা পাই আমি। বৃত্তি একটা পেয়েছিলাম বটে…মেরিট স্কলারশিপ…. তবে সে কথা বাড়ির সবাই তো জানতো …তাই আমি সে টাকাটা মাকে এনে দিয়ে দিতাম।

পরে একটু উঁচু ক্লাশের বাচ্ছাদের পড়ানো শুরু করতে তখন একটু বেশী টাকা পেতে খুব আনন্দ হয়েছিল।

তবে ইকবাল কি করে ঠিক জেনে ফেলেছিল ব্যাপারটা। একদিন আমাকে খুব বকুনি….বলে… ‘সামনে তোর হায়ার সেকেন্ডারী….আর তুই টিউশানী করে বেড়াচ্ছিস শুনলাম। কেন রে?’

‘আরে চুপ চুপ….তুই জানিস না? টিউশানী করলে সেই ক্লাশের সব বিষয়ের পড়া দিব্যি মুখস্থ হয়ে যায় তা জানিস?’

‘তুই আমাকে বোকা বানাচ্ছিস?’

ব্যস…অভিমানে ছেলেটা কেঁদেই ফেললো ঝর ঝর করে পথেই ………সর্বনাশ……এখন তাড়াতাড়ি ছেলেটার হাত ধরে টেনে নিয়ে ঢোক একটা কফি হাউসের মধ্যে….বলো সেই রূপবান ছেলেকে সব কথা…..উঃ…যার একটা অমন বন্ধু থাকে না….তাকে অনেক কিছুই করতে হয়। আমার নিয়তি………..

তা সব শুনে কিশোর ছেলেটা জলভরা বড় বড় চোখ দু’টো একটু মুছে নিয়ে বললো-‘হুঁ, ঠিক কাজ করেছিস তুই….তবে আমি কিছু দিলে হয়তো ওরা নেবে না তাই না রে? আমি যে মুসলমানের ছেলে আর যতই নীচু জাত হোক ওরা তো হিন্দু….’

‘নিকুচি কিয়া হ্যায় তোর ছাতার হিন্দুর। অত বড় দুর্ঘটনা হ’লো, সংসারটা ভেসে গেলো তখন কটা হিন্দু এসে দাঁড়িয়েছে? দেখেছে? তুই পারলে আমাকে দিয়ে দিস তবে আমি অবশ্য বলবো নিয়তিকে….লুকিয়ে দেবো না.’

‘তখন যদি না নেয়?’

‘না নেবে। নেবার লোক হাজার…দাতা এক রাম….তা জানিস?’

‘তুই যদি এই সব করতে গিয়ে শেষে পরীক্ষায় ফেল করিস ভাই, তখন তো ধরা পড়ে যাবি?’

‘সেটা সম্ভব নয়।‘

‘কেন?’

‘আগেই বলেছি না তোকে। এখনই আমি স্কুল ফাইন্যালের ছাত্রদের পড়াচ্ছি…সব মুখস্থ হয়ে গেছে। সামনের মাস থেকে একটা হায়ার সেকেন্ডারির ছেলেকেও পড়াবো। অফার এসে গেছে। সব পড়া মুখস্থ হয়ে যাবে আপনিই….দেখবি তোকে হারিয়ে দেবো ঠিক…হিঃ…হিঃ….হিঃ..’

‘তা দিস তুই আমাকে হারিয়ে। তুই অনেক বড় মাপের মানুষ। তোর কাছে আমার মতন একটা সাধারণ ছেলের হারতে লজ্জা নেই রে। তোকে আমার রহীম বলে ডাকতে ইচ্ছে করছে …’

‘অ্যাই খবর্দার বলছি। মারবো এক চড় তোকে তাহ’লে…একমাত্র আল্লাহ পাক হলেন রহীম…তিনিই করীম…তুই মুসলমান হয়ে আমাকে রহীম বলতে চাস? ছিঃ….’

‘কি করব বল? আমি যে তোর মধ্যে তাঁর ছায়া দেখতে পাচ্ছি…’

‘হিন্দুদের মতন কথা বলবি না বলছি। তিনি এক এবং অদ্বিতীয়….তাঁর ছায়া বা মূর্তি হয় না। তবে তিনি যাকে দিয়ে তাঁর যা খিদমত করাতে চান সেটা তার সৌভাগ্য রে ভাই.’

‘হুঁ মনে হচ্ছে তুইই একজন খাঁটি মুসলমান আমি নয়। তবে তুই নিয়তিকে একটু দেখিস। শুনছি মেয়েটা কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে দিন কে দিন।‘

‘কেন?’

‘তা জানি না।…… হয়তো তোর কাছে টাকা নিতে হচ্ছে বলে? হয়তো সে তোকে মুহব্বত করে বলে? হয়তো তোকে চায় শাদী করতে যাতে সে গ্রহীতা হয়ে না থাকে? আর সেটা হয়তো সম্ভব হবার নয় তোদের হিন্দু সমাজে…..

ইকবাল ছেলেটা যে শুধু সুন্দর তাই নয়, বেশ বুদ্ধিমান ও তা আমি জানতাম। আজ মনে হ’লো ছেলেটা জিনিয়াস ও নয় সুপার জিনিয়াস। আচ্ছা তা হলে আমি ওকে অনায়াসে হারাই বা টপকে যাই কি করে পরীক্ষায়? অ্যাঁ.? ও নিজেই হেরে যায় না তো আমার জন্য? ও ছেলে না পারে কি? সব প্রশ্ন করে না সল্ভ পরীক্ষায়.?

কে জানে বাবা? আর আমাকে এসে রহীম বানায়?

আমার একটা গান মনে পড়লো হঠাৎ করে………কে জানে মা কালী কেমন?’

তবে ইকবাল যা বলে তা অবশ্য ফলে। সে বার টাকা নিতে নিতে নিয়তি কেঁদে ফেলল। যত জিজ্ঞেস করি কি হয়েছে, তত কাঁদে। শেষে বলে আমাকে তুই একটা যে কোন কাজ যোগাড় করে দিতে পারবি’?

‘কেন? আমার টাকা নিতে তোর সন্মানে ঘা লাগছে বুঝি?’

‘না রে…ও তুই বুঝবি না।‘

‘হুম….বুঝেছি’…..

‘ছাই বুঝেছিস’……….বলে নিয়তি দৌড়ে চলে গেল তবে পরে মাসিমাও যখন বললেন একই কথা, তখন সন্ত্রস্ত হয়ে উঠলুম আমি।

‘বাবা….তুমি একটু দেখো…আমার মেয়েটার মাথাটা যেন দিন কে দিন কেমন খারাপ মতনই হয়ে যাচ্ছে। রোজ রাতে শুয়ে শুয়ে কাঁদে….দিনে হঠাৎ করে কখনো রাস্তায় বেরিয়ে চলে যায় …কাকে যেন… আসছি……বলে। আমার গতিক সুবিধের বলে মনে হচ্ছে না বাবা.’

‘বেশ তো । আপনি হরিশ ডাক্তারকে দেখান আজই। যা লাগবে, ব্যবস্থা হয়ে যাবে মাসিমা। কোন চিন্তা নেই আপনার। সে ভালো হয়ে উঠলেই আমার ভালো লাগবে….’

তা ঘটনাটা ঘটলো ঠিক সাতদিন পরে।

সেই পথ দুর্ঘটনা। সে দিন বিকেল থেকেই জোর বৃষ্টি পড়ছিলো। একটা ছাতি মাথায় দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিল নিয়তি দোকান থেকে জিনিষপত্র কিনে নিয়ে ফেরবার পথে। দূরাগত মোটরটা দেখতে পায় নি হয়তো। চালক ব্রেক কষেছিল ঠিকই তবে জলকাদায় স্কিড করলো চাকা। হাসপাতালে মুভ করবার পথেই সব শেষ। শুনলাম, ওর বাবার ও এই রকমই দুর্ঘটনা ঘটেছিল না কি?

আমি একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে পড়লুম যেন। কি হবে আর টিউশানী করে? সব ফাঁকি। মিছে।

খবরটা ইকবাল ও পেয়েছিল। পথেই একদিন দেখা করল আমার সাথে।

‘কি রে? কেমন আছিস?’

ভালো নয়। তুই এখন আরো সাবধানে থাকবি একটু’।

‘কেন?’

‘তোর বিপদ হতে পারে’।

‘কেন?’

‘কেন বাদ দে। তুই টিউশানী করছিস কিনা এখন তাই বল?’

‘নাঃ….আর কি হবে করে? কার জন্য?’

‘আরেঃ…তুই কি বলছিস?এখন তো মাসিমা আর ও একলা আর ও অসহায় হয়ে পড়বেন। ছোট একটা ছেলে নিয়ে….’

‘তা আমি………আমি আর কি করব?’

‘যা করতিস। তবে আমি না হয় এসে টাকাটা মাসিমার হাতে দিয়ে যাবো। তোকে এখন আর আসতে হবে না কিছুদিন’……..

‘তা কেন?’

‘মনে হয় তোর পক্ষে সেটাই ভালো হবে। আজ যাই। ও মাসের দু’তারিখে আসবো। আর না পারলে তোকে আর টিউশানী করতে যেতে হবে না। আমিই সব ম্যানেজ করে নেবো..’

‘সে হবে না রে ভাই। তুই হিন্দুত্বের হ ও জানিস না। কি যে সন্কীর্ণমনা…..তুই বুঝবি না। না খেয়ে মরলে ও মুসলমানের দেওয়া টাকা ছোঁবে না জাতধর্ম চলে যাবার ভয়ে। এই ধর্ম যত শীঘ্র …..’

‘থাক ভাই…………তবে তুই কিছু যদি ভয় পাস বা সন্দেহ করিস তো সোজা আমাদের বাড়িতে চলে আসবি কিন্তু…..কথা দে তুই।

‘আমি কি ভীতুর ডিম না কি? তবে তুই হঠাৎ এই সব কথা বলছিস যে?’

‘আমার কেমন সন্দেহ হচ্ছে……থাক গে।.ও কিছু না….’

যেমন চলছিল তেমনই সব আবার চলতে লাগলো।

মাস কয়েক কেটে গেছে।

শীতকাল।

জানুয়ারির দু’তারিখ। টিউশানী সেরে ছাতি মাথায় ফিরছি। নিয়তিদের বাড়ী হয়ে বাড়ী যাবো। বড় রাস্তা পার হয়ে গলির মুখে ঢুকতে যাচ্ছি একটা জোর হাওয়ার ধাক্কায় ঝপাৎ করে ছাতাটা উল্টে গেলো। সে আর কিছুতেই সোজা করতে পারি নে। শীতের বৃষ্টিতে ভিজছি।

হঠাৎ কেউ যেন ছাতাটা এক ঝটকা মেরে টেনে নিয়ে ফট করে সোজা করে আমার মাথায় ধরে বললো- ‘হয়েছে, এবার দাও টাকাটা। তোমাকে আর জলকাদা ভেঙে যেতে হবে না…’

‘তুমি…..মানে আপনি কে? আমি তো ঠিক………….’

‘এরই মধ্যে আর চিনতে পারছিস না। কি রে তুই? যাক…………….আমি নিয়তি.’

‘তুই না মারা গেছিস?’

‘তা মরে গেছি বলে কি আর আসতে নেই? বাবা আমার উপকার করেছে খুব। শেষের দিকে তো প্রায়ই আসতো…..এখন আর আমার মনে কোন কষ্ট নেই। কেননা আমার তো আর এখন কোন জাত নেই, ধর্ম ও নেই…তাই তোর টাকা নিতে ও লজ্জা নেই। এমনকি তোর বন্ধুর টাকা ও আমি নিতে পারি এখন স্বচ্ছন্দে। আর কে কি বলবে আমাকে বল? বাড়িটা সারাতে হবে তো। ঘরে যে জল পড়ে বৃষ্টি হলেই। ভাইটাকেও মানুষ করতে হবে.’

‘তুই এই সব কি করে করবি?’

‘আরে আমি কি আর করবো? করবি তুই আর তোর বন্ধু’।

‘আর তুই কি করবি?’

‘যা করছি…’

‘মানে?’

‘হিঁ……….হিঁ………হিঁ……..তোর ঘাড়ে চেপে থাকবো। আর কোথায় যাবো বল?’

‘সর্বনাশ ….আমার যে বিয়ের ঠিক করছে বাড়ী থেকে। জানিস তো আমাদের বংশে অল্প বয়সেই বিয়ে হয়…….’

‘হওয়াচ্ছি….আমি তোর বিয়ে…..কালই না তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছি শ্যাওড়া গাছের ডালে তো আমার নাম নেই..তোর ভাগ্যে আর বিয়ে করা নেই…… হিঁ…….. হিঁ…….. হিঁ...’

‘এই নে…রাখ টাকাটা…..আমি তবে যাই। আমার মাথা ঘুরছে এখন বোঁ বোঁ করে ঠিক চরকির মতন….’

‘নাঃ….তুই যেমন দিস গিয়ে মায়ের হাতে দিয়ে আয়। নইলে আমি দিলে মা ভয় পেতে পারে রে..’

আমি টাকাটা দিয়েই ফিরলুম। সোজা ইকবালের বাড়ী। সব শুনে ছেলেটা বললো-‘হুঁ, ইলুউশান…..তবে কাল যদি তোর ভাবী বৌয়ের সত্যিই কিছু হয় তখন আর এটা ইলুউশান থাকবে না আর তোকে ও এখানে আর রাখা যাবে না…’

‘আ আমি কোথায় যাবো? তোদের সবাইকে ছেড়ে? আর কেনই বা?

‘যেখানে হয়। কোন আত্মীয় স্বজনের বাড়ী। তবে তোর ‘সে’ ভাগ্য ভালোই বলতে হবে.’

‘সে ভাগ্য আবার কি?’

‘ওই ইয়ে ভাগ্য…’

‘ইয়ে………সেটা কি বস্তু রে বাবা?’

‘মানে ভালোবাসা মানে প্রেম ভাগ্য আর কি….জবর্দস্ত যাকে বলে’…বলে ইকবাল উঠলো।

‘চল তোকে এখন বাড়ী পৌঁছে দিয়ে আসি। নইলে সবাই খুব চিন্তা করবে। তবে তোর আর একলা যাওয়া ঠিক না এতো রাতে’…

তার তৃতীয় দিনে আমাকে পুরুলিয়া ছাড়তে হয়েছিল।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোহাম্মদ সানাউল্লাহ্ আপনার গল্পটা পড়ে কেন যেন মনে হচ্ছে, নায়কের আত্মার মাঝে দু’টি সত্ত্বার বসবাস ! জানুয়ারীর দু ‘ তারিখের আগের নায়ককে যেমন হিন্দু ভাবতে কষ্ট হচ্ছিল তেমনি পরের নায়ককে আবার আগের নায়কের সাথে মিলাতে পারছিলাম না । তবে আপনার বিশ্বাসের মাঝে একটা সত্যের প্রতি অনুগত দার্শনিক মনের পরিচয় পেয়ে খুব করে মুগ্ধ হলাম । ভাল থাকবেন, শুভেচ্ছা নিবেন ।
ভালো লাগেনি ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
রবিউল ই রুবেন অসম্ভব রকমের ভালো লাগল। ভোট করলাম। শুভকামনার রইল। আমার লেখা গল্প ও কবিতা সময় পেলে পড়বেন।
ভালো লাগেনি ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
মোঃ আক্তারুজ্জামান খুব সুন্দর লিখেছেন। আমার খুব ভালো লেগেছে গল্পটা। আশা করি আরও অনেকেই আপনার এই লেখাটা পড়বে। ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

২৩ এপ্রিল - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ২০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪